সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:০৬ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
২০২৫-২০২৬ সেশনের জন্য চিলাউড়া-হলদিপুর ইউনিয়ন জামায়াতের কমিটি ঘোষণা শান্তিগঞ্জে বর্ণাঢ্য আয়োজনে দৈনিক ভোরের চেতনার প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন  জগন্নাথপুরে স্কুল শিক্ষার্থীর গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা নতুন ইসি শপথ নেবেন রোববার দীর্ঘ ১৩ বছর পরে বিশিষ্ট কলামিস্ট, লেখক ও সাংবাদিক সায়েক এম রহমান এর বাংলাদেশে আগমন সুনামগঞ্জ-৩ আসনে সৈয়দ তালহা আলমকে জমিয়তের প্রার্থী ঘোষণা  জগন্নাথপুরে বিএনপি কার্যালয় ভাঙচুর; সাবেক পরিকল্পনামন্ত্রীসহ ৪৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা জগন্নাথপুরে যুক্তরাজ্যের এএন টিভি’র পরিচালকের সঙ্গে মতবিনিময় সভা একযুগ পর সেনাকুঞ্জে খালেদা জিয়া জগন্নাথপুর উপজেলা জামায়াতের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ও মজলিশে শূরা গঠন

ক্ষমতায় না এলে পদ্মা সেতুর কাজ বন্ধ হয়ে যাবে

ক্ষমতায় না এলে পদ্মা সেতুর কাজ বন্ধ হয়ে যাবে

জগন্নাথপুর নিউজ ডেস্ক আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, পদ্মা সেতু নির্মাণ করতে গিয়ে বিশ্বব্যাংক আমাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছিল, অনেকে অপবাদ দেয়ার চেষ্টা করেছিল। আমি চ্যালেঞ্জ করেছিলাম। কিন্তু বিশ্বব্যাংক কোনো দুর্নীতির প্রমাণ দিতে পারেনি। আমরা চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করেই নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু করেছি।
পদ্মা সেতুর কাজ এগিয়ে যাচ্ছে। কোনো কারণে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসতে না পারলে পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ বন্ধ হয়ে যাবে। তাই আমি দেশবাসীর কাছে প্রত্যাশা করি, উন্নয়নের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখতে নৌকায় ভোট দেবেন। তা না হলে বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় এলে পদ্মা সেতুর কাজ বন্ধ করে দেবে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে ফরিদপুরের ভাঙ্গা মোড়ে স্থানীয় আওয়ামী লীগ আয়োজিত নির্বাচনী জনসভায় প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। এদিন টুঙ্গিপাড়া থেকে ঢাকায় ফেরার পথে সাতটি নির্বাচনী সভায় বক্তব্য দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এসব জনসভায় হাজার হাজার মানুষ অংশ নেয়। পাশাপাশি রাস্তার দুই পাশে নৌকা প্রতীকসংবলিত ব্যানার-ফেস্টুন ও পোস্টার নিয়ে দলটির নেতাকর্মীরা প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানায়।
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, দেশের মানুষ নৌকায় ভোট দিয়ে স্বাধীনতা পেয়েছে, বাংলা ভাষায় কথা বলার অধিকার পেয়েছে। নৌকায় ভোট দিয়ে ক্ষমতায় এনেছিল বলেই গত ১০ বছরে দেশে ব্যাপক উন্নয়ন করেছি। বাংলাদেশ আজ বিশ্বের ‘রোল মডেল’।
উন্নয়নের ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে আওয়ামী লীগকে আবারও ক্ষমতায় আনতে হবে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় না এলে পদ্মা সেতুর কাজ বন্ধ হয়ে যাবে।
আর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে প্রয়োজনে দ্বিতীয় পদ্মা সেতু নির্মাণ করা হবে। দেশবাসীকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে, আগামীতে দেশ উন্নয়নের পথে যাবে নাকি আবার দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন হবে, জঙ্গিবাদ, বাংলা ভাইয়ের জন্ম হবে। উন্নয়ন ও শান্তি চাইলে নৌকায় ভোট দিন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি-জামায়াত এলে দেশের সব উন্নয়ন ধ্বংস করে দেবে, খুন-সন্ত্রাস-দুর্নীতি-জঙ্গিবাদের মাধ্যমে দেশকে আবারও অন্ধকারে নিমজ্জিত করবে।
তাই দেশের মানুষ আর অন্ধকারের যুগে ফিরে যেতে চায় না, দেশবাসী চায় নৌকায় ভোট দিয়ে আলোর পথেই এগিয়ে যেতে। দেশের শান্তি স্থিতিশীলতা বজায় থাকলে উন্নয়ন হবে।
আমরা রাজনীতি বিত্তশালীদের জন্য নয়, আমার রাজনীতি গরিব-মেহনতি মানুষের জন্য। তিনি বলেন, বিএনপি-জামায়াতের অন্ধকার থেকে আমরা আলোর পথে যাত্রা শুরু করেছি, এই উন্নয়নের মহাসড়ক দিয়ে বাংলাদেশের সমৃদ্ধির পথে যাত্রার ধারাবাহিকতা যেন অব্যাহত থাকে। সে জন্য আবারও নৌকায় ভোট দিয়ে আওয়ামী লীগ প্রার্থীকে বিজয়ী করুন।
দৌলদিয়া ফেরিঘাটে আয়োজিত জনসভায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, পদ্মা সেতু নিয়ে আমাদের বিরুদ্ধে নানা অপপ্রচারের চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু আমরা চ্যালেঞ্জ নিয়েই তা মিথ্যা প্রমাণিত করেছি।
রাজবাড়ীর মানুষের দাবি আছে, দ্বিতীয় পদ্মা সেতু করা। আগামীতে ক্ষমতায় আসতে পারলে প্রয়োজনে এখানে দ্বিতীয় পদ্মা সেতু নির্মাণের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে। ইতিমধ্যে আমরা সম্ভাব্যতা যাচাই করছি। এ ছাড়া মানিকগঞ্জে পৃথক দুটি নির্বাচনী সভায় অংশ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দ্বিতীয় পদ্মা সেতু করার ঘোষণা দেন।
দেশের উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে হলে সরকারের ধারাবাহিকতার প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, আমার কোনো চাওয়া-পাওয়ার কিছু নেই। বাবা-মা, ভাইসহ সবাইকে হারিয়ে দিন-রাত পরিশ্রম করছি, যাতে দেশের মানুষ একটু ভালো থাকে। দেশের তরুণ প্রজন্মের জন্য আমরা একটা উন্নত ও সমৃদ্ধ দেশ রেখে যেতে চাই।
আগামীতে ক্ষমতায় এলে দেশের একটি মানুষেরও ঘর অন্ধকার থাকবে না, কোনো মানুষ গৃহহীন থাকবে না। এ জন্য আরেকটিবার দরকার আওয়ামী লীগ সরকার।
বৃহস্পতিবার সকালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মাজারে দোয়া, মোনাজাত করার পর সকাল ৯টার দিকে টুঙ্গিপাড়া থেকে সড়কপথে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
পথিমধ্যে ফরিদপুর মালিগ্রাম ভাঙ্গার মোড়, ফরিদপুরের কমরপুর মোড়, রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ফেরিঘাট, মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া, মানিকগঞ্জ পৌরসভা মোড়, ধামরাই রাবেয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল প্রাঙ্গণ এবং সাভার বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে সাতটি পৃথক নির্বাচনী জনসভায় বক্তব্য দেন প্রধানমন্ত্রী।
এই সফরে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন তার ছোট বোন শেখ রেহানা। এসব এলাকার সংসদীয় আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীদের নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে বিজয়ী করার জন্য প্রধানমন্ত্রী স্থানীয় ভোটারদের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, যদি দেশের উন্নয়নের গতি আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে চান, দেশকে সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নিয়ে যেতে চান, তাহলে নৌকায় ভোট দিয়ে আওয়ামী লীগকে আরেকটিবার দেশসেবার সুযোগ দিন।
একমাত্র নৌকায় দেবে উন্নয়ন, গতিশীলতা আর মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন। নৌকা না থাকলে এসব থাকবে না, সবকিছু ধ্বংস করে দেবে। তিনি বলেন, খুনি, সন্ত্রাসী, বিদেশে অর্থ পাচারকারী, অগ্নিসন্ত্রাসকারী, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলাকারী, স্বাধীনতাবিরোধী ও এতিমের টাকা আত্মসাৎকারীরা (বিএনপি-জামায়াত) আর যাতে ক্ষমতায় যেতে পারে, দেশকে আবারও ধ্বংস করতে না পারে, সে ব্যাপারে সবাই ঐক্যবদ্ধ হোন। সন্ত্রাস, দুর্নীতি, জঙ্গিবাদ ও মাদকমুক্ত তরুণ সমাজের জন্য উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গঠনই আগামীতে আমাদের মূল লক্ষ্য। নির্বাচনে বিজয়ী হলে তরুণ সমাজ বিশেষ করে আগামী প্রজন্মের জন্য নিরাপদ বাংলাদেশ গড়ে তুলব।
দেশবাসীর উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী প্রশ্ন রেখে বলেন, আগামী ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই নির্বাচনে আপনাদেরই (দেশবাসী) সিদ্ধান্ত নিতে হবে আমরা কেমন বাংলাদেশ দেখতে চান? বাংলাদেশে আবারও জঙ্গিবাদ, বাংলা ভাই, একই দিনে পাঁচশ’ স্থানে বোমা হামলা, গ্রেনেড হামলা, সন্ত্রাস, দুর্নীতির মতো অতীতের অন্ধকারের দিকে ফিরে যাবেন, নাকি জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাস-মাদক-দুর্নীতিমুক্ত বর্তমানের উন্নয়নের আলোর পথেই থাকবেন? সেই সিদ্ধান্ত আপনাদেরই নিতে হবে। নৌকায় ভোট দিয়ে আপনারা বাংলা ভাষায় কথা বলার অধিকার, স্বাধীনতা, উন্নত-সমৃদ্ধ ডিজিটাল বাংলাদেশ পেয়েছেন, আবারও নৌকায় ভোট দিন, ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ আপনাদের উপহার দেব। প্রত্যেক গ্রামকে আমরা শহরে পরিণত করব।
আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী জাফর উল্লাহর নির্বাচনী এলাকা ফরিদপুর-৪ আসনে আয়োজিত জনসভায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, আপনারা নৌকায় ভোট দেবেন? আমাকে দুই হাত তুলে ওয়াদা করুন। ওই সময় দুই হাত তুলে ‘হ্যাঁ’সূচক জবাব দেন উপস্থিত জনতা। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আপনারা ওয়াদা করেছেন নৌকায় ভোট দেবেন। আমিও ওয়াদা করছি ক্ষমতায় আসতে পারলে প্রতিটি গ্রামকে শহরে উন্নীত করব।
দেশের মানুষের একটি ঘরও অন্ধকারে থাকবে না। প্রতিটি ঘর বিদ্যুতের আলোয় আলোকিত হবে। প্রয়োজনে বুকের রক্ত দিয়ে হলেও দেশের মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠিত করব। ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত উন্নত-সমৃদ্ধ বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা আমরা গড়ে তুলবই। আমরা ২০২১ সালে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালন করব। আমরা ক্ষমতায় থেকেই এটি পালন করতে চাই।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বিজয়ের মাস ডিসেম্বর নৌকার ও আওয়ামী লীগের বিজয়ের মাস। এ আসনে আমরা একজন প্রার্থী করেছি, তাকে নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করুন।
এ আসনে আওয়ামী লীগেরই বিদ্রোহী প্রার্থী বর্তমান এমপি মজিবর রহমান নিক্সনের নাম উল্লেখ না করে বলেন, নির্বাচনের সময় অনেক প্রলোভন দেখাতে পারে। অনেক কথা বলতে পারে। কিন্তু কোনো সন্ত্রাসী, জঙ্গিবাদী কিংবা মাদক ব্যবসায়ীরা আপনাদের ভোট ছিনতাই করতে না পারে সেজন্য সবাই সতর্ক থাকবেন।
সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে ভোট কেন্দ্র পাহারা দেবেন। আপনার ভোট আপনি দেবেন, নৌকায় মার্কায় ভোট দেবেন। সবাই মনে রাখবেন একটি ভোট ও একটি আসনও আমাদের কাছে অনেক মূল্যবান। একটি আসনের কারণেও হয়তো সরকার গঠন করা সম্ভব নাও হতে পারে। সে কারণে যেখানে যাঁকে নৌকার প্রার্থী করেছি, তাঁদেরকে ভোট দিয়ে আমাদেরকে সরকার গঠন করতে সহায়তা করুন।
ফরিদপুর বিভাগ প্রক্রিয়াধীন : ফরিদপুরের কোমরপুরের নির্বাচনী সভায় ফরিদপুরবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি ‘ফরিদপুর বিভাগ’ করার প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ফরিদপুরবাসীকে কোনো দাবি করতে হবে না। জাতির জনককে হত্যার পর কেউ এ এলাকার উন্নয়ন করেনি।
অনেকেই মন্ত্রী হয়েছিলেন। আগে ফরিদপুরকে ফকিরপুর বলা হতো। এখন আর ফকিরপুর নেই, সত্যিই উন্নত ফরিদপুর হয়েছে। ফরিদপুর বিভাগ ঘোষণার বিষয়ে তিনি বলেন, ফরিদপুরকে বিভাগ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম।
এ ব্যাপারে আলাপ-আলোচনা চলছে। একটি জেলা নিয়ে বিভাগ করা যায় না। সে কারণে অন্যান্য জেলার সঙ্গে আলাপ-আলোচনা চলছে। আগামীতে ক্ষমতায় আসলে ফরিদপুরকে বিভাগ করা হবে।
ফরিদপুর-৩ আসনে বর্তমান মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেনকে নৌকায় ভোট দিয়ে বিজয়ী করার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় থাকতে দেশকে পাঁচবার দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন করেছে।
এতিমের টাকা আত্মসাৎ পর্যন্ত করেছে। এ কারণে বিএনপি নেত্রী দণ্ডিত হয়ে এখন কারাগারে। তিনি বলেন, দুর্নীতি-সন্ত্রাস-বিদেশে অর্থ পাচার, এতিমের টাকা আত্মসাৎ, জঙ্গিবাদ সৃষ্টি এটাই ছিল তাদের নীতি। দুর্নীতিকেই তারা নীতি হিসেবে নিয়েছিল, দেশের কোনো উন্নয়ন করেনি।
আমরা ক্ষমতায় এসে পুরো বাংলাদেশেই ব্যাপক উন্নয়ন করেছি। আপনারা নৌকায় ভোট দিয়েছিলেন বলেই এই উন্নয়নের মহাসড়কে পৌঁছাতে সক্ষম হয়েছি। এই উন্নয়নের মহাসড়কের গতি যেন চলমান থাকে সেটাই আমার চাওয়া।
সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ ও মাদকের বিরুদ্ধে বর্তমান সরকারের কঠোর অভিযান অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ ব্যাপারে দেশবাসীর সহযোগিতা চাই। কারণ মাদকের কারণে শুধু তরুণ সমাজই নয়, একটি সমাজ, পরিবারকে ধ্বংস করে দেয়।
তাই দেশের যুব সমাজের সকল অভিভাবক, শিক্ষক, মাদ্রাসার ইমামসহ সবার প্রতি অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, আপনাদের সন্তান-ছাত্ররা মাদক কিংবা জঙ্গিবাদে জড়িয়ে পড়ছে কি না, কে কোথায় যাচ্ছে, কার সঙ্গে মিশছে- নজর রাখুন।
সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ ও মাদকের বিরুদ্ধে সরকারের চলমান অভিযানে সহযোগিতা করুন। দেশবাসীর উদ্দেশে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমরা দেশকে দুর্নীতিমুক্ত ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত করে গড়ে তুলতে চাই। এটা সম্ভব হবে যদি আপনার নৌকায় ভোট দিয়ে আওয়ামী লীগকে আবারও দেশ সেবার সুযোগ দেন। আগামীতে ক্ষমতায় আসলে ফরিদপুরকে বিভাগ করা হবে।
মানিকগঞ্জে আন্তর্জাতিক স্টেডিয়াম ও অর্থনৈতিক জোন করা হবে : পাটুরিয়া ঘাটে আয়োজিত সমাবেশে মানিকগঞ্জ-১ আসনে জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক এ এম নাইমুর রহমান দুর্জয়কে বিজয়ী করার জন্য এলাকাবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, নৌকায় দেবে উন্নয়ন, গতিশীলতা ও মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন। নৌকা না আসলে এসব কিছুই থাকবে না, সবকিছু ধ্বংস করে দেবে। বিএনপি ক্ষমতায় থেকে দেশকে পাঁচবার বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন করেছে, আর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থেকে সারাবিশ্বে দেশকে উন্নয়নের রোলমডেলে পরিণত করেছে। তিনি বলেন, মানিকগঞ্জে অনেক মানিক আছে। আমরা কিছু মানিক কুড়িয়ে এনেছি। নাইমুর রহমান দুর্জয় ক্রিকেটের একটি মানিক। তিনি আপনাদের এমপি। মমতাজ বেগম আরেকজন মানিক।
তিনি গানের শিল্পী। তাদের আরেকজন জাহিদ মালেক স্বপন। তিনজনকে নৌকা মার্কার প্রার্থী করেছি। তাদেরকে বিজয়ী করুন। বিএনপি-জামায়াতের কঠোর সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, নির্বাচন ঠেকানো এবং সরকারের উৎখাতের নামে খালেদা-তারেক জিয়া হুকুম দিয়ে পাঁচশ’ মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করেছে।
অগ্নিসন্ত্রাস করে নিরীহ মানুষকে হত্যা করেছে। কোনো সুস্থ মানুষ কোনো জীবন্ত মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করতে পারে না। দেশের মানুষের প্রতি এদের এতটুকু দরদ নেই, মানুষের ভালো তারা বোঝে না, শুধু ধ্বংস করতে জানে।
সরকারের ধারাবাহিকতা প্রয়োজন : ধামরাইয়ের হার্ডিঞ্জ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় ও সাভার বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ মাঠে নির্বাচনী সভায় অংশ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমরা সরকারে থেকে গত দশ বছরে ব্যাপক উন্নয়ন করেছি।
এই উন্নয়নের ধারাবাহিকতা ধরে রাখার জন্য সরকারের ধারাবাহিকতা প্রয়োজন। এ জন্য নৌকায় ভোট দিন। আওয়ামী লীগ জনগণের সেবা করে। আমি জনগণের কল্যাণে রাজনীতি করি। আমার রাজনীতি গরিব-মেহনতি মানুষের জন্য। তাদের সেবা করাই আমার কাজ। উন্নয়নের ফিরিস্তি তুলে ধরে নৌকা মার্কায় ভোট চান প্রধানমন্ত্রী। এ সময় তিনি উপস্থিত জনতার কাছে দুই হাত তুলে ওয়াদা নেন।
নৌকায় ভোট চাইলেন চিত্রনায়ক রিয়াজ ও ফেরদৌস : নৌকায় ভোট চাইলেন রুপালি পর্দায় জনপ্রিয় দুই নায়ক রিয়াজ ও ফেরদৌস। এ দুই তারকাই আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্বাচনী সফরসঙ্গী হয়েছেন।
সকালে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ৭টি নির্বাচনী জনসভায় মঞ্চে উপস্থিত থেকে বক্তৃতা করেন। রাজবাড়ীর গোয়ালন্দঘাটে স্থানীয় আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় চিত্রনায়ক রিয়াজ বলেন, সামনে নির্বাচন আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
এই নির্বাচনে স্বাধীনতার পক্ষের শক্তিকে ক্ষমতায় আসতে হবে। বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, এগিয়ে যাবে। বিশেষ করে তরুণ সমাজের প্রথম ভোট স্বাধীনতার পক্ষে ও বাংলাদেশের পক্ষে হোক। নৌকায় ভোট দিন।
চিত্রনায়ক ফেরদৌস বলেন, আপনারা যারা আমার অভিনয়ে বিন্দুমাত্র আনন্দ পেয়ে থাকেন, তাদের একটা দায়িত্ব রয়েছে। সে দায়িত্ব প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় আনা। একটি শিশু যেমন মায়ের কোলে নিরাপদ, তেমনি জননেত্রী শেখ হাসিনার কাছে বাংলাদেশ নিরাপদ। নিরাপদ বাংলাদেশ গড়ে তুলতে আবারও নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে চতুর্থবারের মতো আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনাকে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত করুন।
৩০ গাড়ির ফেরি ভাড়া দিলেন প্রধানমন্ত্রী : আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত বুধবার আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনী সফরে বের হন গত বুধবার। নির্বাচনী সফরে তিনি সরকারি কোনো সুযোগ সুবিধা গ্রহণ করেননি।
প্রথম দিনের মতো গতকাল দ্বিতীয় দিনেও তিনি ব্যক্তিগত গাড়ি, ড্রাইভারসহ যাবতীয় খরচ নিজস্ব তহবিল থেকে বহন করেছেন। গতকাল সকালে টুঙ্গিপাড়া থেকে সড়কপথে ঢাকায় ফেরেন। ফেরার পথে রাজবাড়ীর পাটুরিয়া ফেরিঘাটে নিজের গাড়িসহ দুটি ফেরিতে তার সফরসঙ্গী ৩০টি গাড়ির ভাড়া নিজস্ব তহবিল থেকে পরিশোধ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল হক করিম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, নির্বাচনী সফরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কোনো ধরনের সরকারি সুযোগসুবিধা গ্রহণ করেননি, এমনকি গাড়িতে তিনি দলীয় পতাকা বহন করেননি।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published.

© All rights reserved © 2017-2023 Jagannathpurnews.Com
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com